
ঢাকা শহরে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশের জন্য স্বাধীনতার আগে জায়গা ছিল একটাই, পল্টন ময়দান। পল্টনে বড় হয়ে উঠেছি বলে এ এলাকার রাজনৈতিক হাওয়াটা উপো করা সম্ভব হয় নি। আমাদের পাড়ায় উঠতি বয়সীদের একটা কাব ছিল, নাম একতা বিতান। ঐ কাবে খেলাধূলার পাশাপাশি আমরা রাজনীতি নিয়ে তর্ক-বিতর্কেও মেতে থাকতাম। সে সময় রাজনীতিতে দুটি জনপ্রিয় কণ্ঠস্বর ছিল। একদিকে মাওলানা ভাসানী, অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। ভাসানী করেছেন মেহনতি মানুষের রাজনীতি আর বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি ছিল জাতীয়তাবাদের। আপাতদৃষ্টিতে দুজনকে আলাদা রাজনীতি করতে দেখা গেলেও বাঙালির অধিকার আদায়ের প্রশ্নে তারা ছিলেন এক। ভাসানী কখনোই বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ছিলেন না। তিনি সবসময় সহায়ক শক্তি হিসেবে বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকেছেন। বঙ্গবন্ধু যেমন বলেছেন, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। তেমনি ভাসানীও পল্টনের জনসভায় বলেছিলেন, লাকুম দিনুকুম ওয়ালিয়াদিন। তোমরা তোমাদের নিয়ে থাকো, আমরা আমাদের নিয়ে থাকি।
ছোটবেলা থেকেই আসলে আমাদের মাথায় ঢুকে যায় যে, পাকিস্তানি আর আমরা এক জাতি নই। ওদের ভাষা আলাদা, পোশাক আলাদা, খাবার আলাদা। ওরা সংখ্যায় কম হলেও সব সুযোগ-সুবিধা ওরাই নিচ্ছে। সেনাবাহিনীতে বাঙালি অফিসার কম, সরকারী সিভিল সার্ভিসে বাঙালি অফিসার কম। মেধা ও দতা থাকলেও সরকারী চাকরিতে একটা পর্যায়ের পরে বাঙালিদের প্রমোশন দেওয়া হয় না। আমাদের দেশের সোনালী আঁশ রপ্তানির টাকায় পশ্চিম পাকিস্তানে গড়ে তোলা হচ্ছে বড় বড় ভবন আর কারখানা-ইন্ড্রাষ্ট্রি। এই বৈষম্য আর শোষণ আমাদের তরুণ মনে তীব্র রেখাপাত করে।
২৫ মার্চের গণহত্যার পর আমাদের পাকিস্তান বিদ্বেষ পরিণত হয় প্রচন্ড ঘৃণায়। তাই স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হলে আমি সূযোগ খুঁজতে থাকি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার। ঢাকায় তরুণদের খুঁজে বের করে করে মেলে ফেলা হচ্ছে, কাজেই আমাকে পালাতে হলো। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে পালিয়ে ছিলাম জিঞ্জিরায়, তারপর কিছুদিন বিক্রমপুর। পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে ঢাকায় ফিরি। ভাগ্য সু-প্রসন্ন, ঢাকায় ফিরেই বাচ্চু ভাইয়ের দেখা পেয়ে গেলাম। তিনি বললেন, সবকিছু ঠিকঠাক করা আছে। চলো ট্রেনিংয়ে চলো। আগরতলায় ট্রেনিং নিলাম। তারপর ঢাকা উত্তর সেকশনের হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করলাম। মুক্তিযুদ্ধে বায়তুল মোকাররম মার্কেটের সামনে গাড়ি বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে পাকিস্তানি মিলিটারিদের ভ্যান উড়িয়ে দেওয়ার অপারেশনটি আমার মুক্তিযোদ্ধের একটি স্মরণীয় অভিজ্ঞতা।
ছোটবেলা থেকেই আসলে আমাদের মাথায় ঢুকে যায় যে, পাকিস্তানি আর আমরা এক জাতি নই। ওদের ভাষা আলাদা, পোশাক আলাদা, খাবার আলাদা। ওরা সংখ্যায় কম হলেও সব সুযোগ-সুবিধা ওরাই নিচ্ছে। সেনাবাহিনীতে বাঙালি অফিসার কম, সরকারী সিভিল সার্ভিসে বাঙালি অফিসার কম। মেধা ও দতা থাকলেও সরকারী চাকরিতে একটা পর্যায়ের পরে বাঙালিদের প্রমোশন দেওয়া হয় না। আমাদের দেশের সোনালী আঁশ রপ্তানির টাকায় পশ্চিম পাকিস্তানে গড়ে তোলা হচ্ছে বড় বড় ভবন আর কারখানা-ইন্ড্রাষ্ট্রি। এই বৈষম্য আর শোষণ আমাদের তরুণ মনে তীব্র রেখাপাত করে।
২৫ মার্চের গণহত্যার পর আমাদের পাকিস্তান বিদ্বেষ পরিণত হয় প্রচন্ড ঘৃণায়। তাই স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হলে আমি সূযোগ খুঁজতে থাকি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার। ঢাকায় তরুণদের খুঁজে বের করে করে মেলে ফেলা হচ্ছে, কাজেই আমাকে পালাতে হলো। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে পালিয়ে ছিলাম জিঞ্জিরায়, তারপর কিছুদিন বিক্রমপুর। পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে ঢাকায় ফিরি। ভাগ্য সু-প্রসন্ন, ঢাকায় ফিরেই বাচ্চু ভাইয়ের দেখা পেয়ে গেলাম। তিনি বললেন, সবকিছু ঠিকঠাক করা আছে। চলো ট্রেনিংয়ে চলো। আগরতলায় ট্রেনিং নিলাম। তারপর ঢাকা উত্তর সেকশনের হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করলাম। মুক্তিযুদ্ধে বায়তুল মোকাররম মার্কেটের সামনে গাড়ি বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে পাকিস্তানি মিলিটারিদের ভ্যান উড়িয়ে দেওয়ার অপারেশনটি আমার মুক্তিযোদ্ধের একটি স্মরণীয় অভিজ্ঞতা।
Post a Comment