শ্রীমঙ্গলের চারদিকে বিস্তীর্ণ কালেঙ্গা অরণ্য- আমাদের গেরিলাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল। মাঝে মধ্যে ভুল করে পা মাড়ালেও মুক্তিবাহিনীর এমব্যুশে ফিরে যেতে বাধ্য হয় পাকিস্তানীদের।
২৪ শে সেপ্টেম্বর ১৯৭১; এমনই একটি দিন। বড় একটি পাকিস্তানী কলাম এগিয়ে আসছে বুনো পথ ধরে। পথ দেখিয়ে আনছে রাজাকার নাম
্নী ২০/২৫ জনের এদেশীয় কিছু প্রভুভক্ত কুকুর। নায়েব সুবেদার আবদুল মান্নানের নেতৃত্ব রাস্তার দুপাশে এমবুশে প্রস্তুত একটি গেরিলা দল। রুদ্ধশ্বাস নীরবতা, দৃষ্টি নিবদ্ধ রাস্তার দিকে। রাজাকারের দল হেঁটে চলছে রাস্তা দিয়ে, পাশেই রাস্তার ঠিক নীচে এসএমজি নিয়ে পজিশনে মুক্তিবাহিনী। নিরাপদেই রাজাকাররা হেঁটে পার হয়ে যায়, কারণ মুক্তিবাহিনীর লক্ষ্য রাজাকারদলের পেছনে থাকা পাকিস্তানী দলটি, নীচু গোত্রীয় রাজকাররা নয়।
এক সময় পাকিস্তানী সৈন্য দলটি দৃষ্টিগোচর হয় যোদ্ধাদের, কিন্তু গেরিলাদের উপর আদেশ রয়েছে শত্রুর চোখের সাদা অংশটি না দেখা পর্যন্ত অর্থাৎ একেবারে কাছে না আসা পর্যন্ত গুলি না চালাতে। এক সময় পুরো দলটিই এসে ঢুকে পড়ে আমাদের গেরিলাদের পাতা ফাঁদে। নিস্তব্ধ বনাঞ্চলের নীরবতা ভেঙ্গে দিয়ে এক যোগে গর্জে ওঠে আমাদের সব অস্ত্র। ঢলে পড়ে মৃত পাকিস্তানীদের দেহ রাস্তার দুপাশে। বেশ বড় দল হওয়াতে এক সময় পাকিস্তানীরা নিজেদের ক্ষতি সামলে শুরু করে পাল্টা আক্রমণ।
এরই মাঝে নায়েব সুবেদার আবদুল মান্নান জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে নিজের নিরাপদ অবস্থান থেকে উঠে দাঁড়িয়ে এক আহত পাকিস্তানীর কাছে এসে চিৎকার করতে থাকে, "আমি ক্যাপ্টেন আজীজকে কথা দিয়েছি এক পাকিস্তানীকে জীবিত নিয়ে আসবো, তিনি আমাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেবেন।"
নাহ্, সুবেদার মান্নানের আর ফেরা হলো না সেই পাকিস্তানীকে নিয়ে, শত্রুর গুলিতে ঢলে পড়লেন সেই আহত সৈনিকের পাশেই। ফিরে আসেনি মান্নান, ফিরে আসেনি আজীবন ফার্স্ট হওয়া দশম শ্রেণীর ছাত্র ফারূক যে তার বাবাকে চিঠিতে বলেছিলো-Mother and Motherland are superior to heaven, ফিরে আসেনি মায়ের প্রিয় সন্তান বাবুল,রুমী আজাদসহ আরো অনেকেই। মিশে গেছে এদেশের স্বাধীনতার তরে উৎসর্গীকৃত লাখো মানুষের মিছিলে।
বীরের এ রক্তস্রোত, মাতার এ অশ্রুধারা
এর যত মূল্য সে কি ধরার ধুলায় হবে হারা।
---------------
তথ্যসূত্রঃ Bangladesh at War (Maj. Gen. Shafiullah)
ছবি কৃতজ্ঞতাঃ জন্মযুদ্ধ'৭১
এক সময় পাকিস্তানী সৈন্য দলটি দৃষ্টিগোচর হয় যোদ্ধাদের, কিন্তু গেরিলাদের উপর আদেশ রয়েছে শত্রুর চোখের সাদা অংশটি না দেখা পর্যন্ত অর্থাৎ একেবারে কাছে না আসা পর্যন্ত গুলি না চালাতে। এক সময় পুরো দলটিই এসে ঢুকে পড়ে আমাদের গেরিলাদের পাতা ফাঁদে। নিস্তব্ধ বনাঞ্চলের নীরবতা ভেঙ্গে দিয়ে এক যোগে গর্জে ওঠে আমাদের সব অস্ত্র। ঢলে পড়ে মৃত পাকিস্তানীদের দেহ রাস্তার দুপাশে। বেশ বড় দল হওয়াতে এক সময় পাকিস্তানীরা নিজেদের ক্ষতি সামলে শুরু করে পাল্টা আক্রমণ।
এরই মাঝে নায়েব সুবেদার আবদুল মান্নান জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে নিজের নিরাপদ অবস্থান থেকে উঠে দাঁড়িয়ে এক আহত পাকিস্তানীর কাছে এসে চিৎকার করতে থাকে, "আমি ক্যাপ্টেন আজীজকে কথা দিয়েছি এক পাকিস্তানীকে জীবিত নিয়ে আসবো, তিনি আমাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেবেন।"
নাহ্, সুবেদার মান্নানের আর ফেরা হলো না সেই পাকিস্তানীকে নিয়ে, শত্রুর গুলিতে ঢলে পড়লেন সেই আহত সৈনিকের পাশেই। ফিরে আসেনি মান্নান, ফিরে আসেনি আজীবন ফার্স্ট হওয়া দশম শ্রেণীর ছাত্র ফারূক যে তার বাবাকে চিঠিতে বলেছিলো-Mother and Motherland are superior to heaven, ফিরে আসেনি মায়ের প্রিয় সন্তান বাবুল,রুমী আজাদসহ আরো অনেকেই। মিশে গেছে এদেশের স্বাধীনতার তরে উৎসর্গীকৃত লাখো মানুষের মিছিলে।
বীরের এ রক্তস্রোত, মাতার এ অশ্রুধারা
এর যত মূল্য সে কি ধরার ধুলায় হবে হারা।
---------------
তথ্যসূত্রঃ Bangladesh at War (Maj. Gen. Shafiullah)
ছবি কৃতজ্ঞতাঃ জন্মযুদ্ধ'৭১
মূল লেখা : http://on.fb.me/PH6orX
Post a Comment