এক বাবরাক কারমাল ও আমাদের স্বাধীনতার পক্ষে আফগানীদের রাজপথে বিক্ষোভ




সৌম্য চেহারার ছবির এই ভদ্রলোক - নাম বাবরাক কারমাল। জাতীয়তা আফগানী। বামপন্থী এই রাজনীতিবিদ আফগানিস্তানের সর্বোচ্চ ক্ষমতায় অসিন ছিলেন দীর্ঘ সময় ধরেই। একাত্তরে পাকিস্তানী বাহিনী যখন নিরীহ এবং নিরস্ত্র বাঙ্গালীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে শুরু করে ইতিহাসের এক জঘন্যতম গণহত্যা
 তখনই কেঁদে ওঠে বাবরাকের বিবেক। পাকিস্তানের প্রতিবেশী রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও কোন ভাবেই সমর্থন করতে পারেননি তিনি এই অনাচার।

তাই ২৭ শে অক্টোবর ১৯৭১, তারই নেতৃত্বে কাবুলের রাস্তায় নেমে আসে আফগান জনগণ। তাকিয়ে দেখুন ডানের ছবির দিকে। চমকে উঠেছেন? ব্যানার ফেস্টুনসহ পুরাদস্তুর পল্টনের এক মহাসমাবেশই যেন চলছে কাবুলের রাস্তায়। অবশ্য তা আফগানীদের নিয়ে, আমাদের স্বাধীনতার দাবীতে। সেই জনসভায় বাবরাক গণহত্যার জন্য ইয়াহিয়ার খানের সামরিক শাসনের কঠোর নিন্দা জানান এবং সেই সাথে আমাদের মুক্তিযুদ্ধেও জানান সমর্থন। শুধু নাই, আফগানিস্তানের সংসদেও তিনি একই বক্তব্য বলেন। দ্ব্যর্থ হীন কণ্ঠে তিনি গণহত্যা বন্ধে হুঁশিয়ারি জানান ইয়াহিয়ার প্রতি।

নিঃসন্দেহে বলা যায়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে, পাকিস্তানী এক প্রতিবেশী রাষ্ট্র আফগানিস্তানে আমাদের স্বাধীনতার পক্ষে এবং পাকিস্তানী জান্তাদের চালানো গণহত্যা বিরোধী এই বিশাল জনসভার গুরুত্ব ছিল বেশ, যা আমাদের স্বাধীনতার দাবীকে করেছিল বেশ সুসংহত।

তাই আসুন দীর্ঘ ৪১ বছর পর হলেও শ্রদ্ধা জানাই এই মানুষটির প্রতি এবং সেই সাথে সেসব মেহনতি মানুষের প্রতিও রইলো অকুণ্ঠ ভালবাসা, যারা সেদিন কাবুলের রাস্তায় উপস্থিত ছিলেন আমাদের প্রিয় বাংলাদেশের স্বাধীনতার দাবীকে সমর্থন জানিয়ে।

হে কাবুল বাসী, একচল্লিশ বছর পরে হলেও, সেদিন ২৭শে আগস্ট ১৯৭১ রাস্তায় নেমে এদেশের তরে উৎসর্গীকৃত তোমাদের একটি বিকেলের প্রতি রইলো বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের নিকট হতে শ্রদ্ধা। কামনা করি অচিরেই গোঁড়ামি দূর হয়ে স্থিতিশীলতা এবং শান্তির বারতা আসুক তোমাদের জীবনে। 





আগে প্রকাশিত: https://fb.com/125
Share this post :

Post a Comment

 
Support : Copyright © 2012. মুক্তিযুদ্ধের গল্প - All Rights Reserved